মোশন গ্রাফিক্সে ক্যারিয়ার – ইন্ডাস্ট্রি ও কাজের অপরচুনিটি

একটা ভিডিও অনেক বেশি ইন্টারেস্টিং হয় যখন ভিডিওতে বেসিক এডিটিং এর পাশাপাশি ঠিকঠাক মতো মোশন গ্রাফিক্স এর কাজ থাকে।

আজকে আপনাদের সঙ্গে গল্প করবো একজন মোশন গ্রাফিস্ক ডিজাইনারের জন্য কি কি কাজের ক্ষেত্র আছে আর খুব ভালো মোশন গ্রাফিস্ক ডিজাইনার হতে গেলে বা এই ক্ষেত্রে খুব সফল হতে  আপনার এই টেকনিকাল স্কিলের সঙ্গে আরও যেসব বিষয়ে গুন অর্জন করতে হবে সেসব নিয়ে। চলুন শুরু করি। 

মোশন গ্রাফিস্ক ডিজাইন একটা গ্লোবাল স্কিল এবং দিন দিন এর ডিমান্ড বাড়ছে। কারণ আমাদের ভিজুয়াল কন্টেন্ট প্রডাকশন এবং কঞ্জাম্পশন দুইই বাড়ছে। আর যেকোনো একটা ভিজুয়াল কিংবা ভিডিও কন্টেন্ট কে ইন্টারেস্টিং বা আকর্ষণীয় করতে ভালো মোশন গ্রাফিক্স এর কাজ মাস্ট। আর এর কাজের ক্ষেত্রও অনেক- 

এ্যাডভার্টাইজমেন্ট ইন্ডাস্ট্রি:

ভালো মোশন গ্রাফিক্স জানা থাকলে মার্কেটিং কিংবা এ্যাডভার্টাইজমেন্ট ইন্ডাস্ট্রি হচ্ছে আপনার জন্য দারুণ একটি কাজের ক্ষেত্র। টিভি এ্যাড কিংবা সোশ্যাল মিডিয়া এ্যাড হোক মোশন গ্রাফিক্স এর মাধ্যমে যেকোনো এ্যাড আরও দৃষ্টি নন্দন করে তোলা যায়।

টিভি কিংবা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি:

এছাড়াও টিভি কিংবা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেও মোশন গ্রাফিক্স ডিজাইনার লাগবেই লাগবে। বিভিন্ন প্রোগ্রাম কিংবা মুভির ওপেনিং ক্রেডিট থেকে শুরু করে স্পেশাল ইফেক্টস, এনিমেশন সিকোয়েন্স, এন্ডিং ক্রেডিট সবই মোশন গ্রাফিক্স ডিজাইনের মধ্যেই পরে।

গেমিং ইন্ডাস্ট্রি:

গেমিং ইন্ডাস্ট্রির  পুরো ভিজুয়াল কন্টেন্ট কিংবা এনিমেশন এর পার্টটাতেই দরকার স্কিলড ও এক্সপেরিয়েন্সড মোশন গ্রাফিস্ক ডিজাইনার। 

ডিজিটাল মিডিয়া:

ডিজিটাল মিডিয়ার এই বুমিং যুগে ওয়েব ডিজাইন, মোবাইল এ্যাপ ডেভলপমেন্ট এসব ডিজিটাল মিডিয়াতেও ভালো মোশন গ্রাফিক্স ডিজাইনারের অনেক ডিমান্ড। 

ফ্রিল্যান্সিং:

মোশন গ্রাফিস্ক এ ভালো স্কিল ও এক্সপেরিয়েন্স থাকলে আপনি ফ্রিল্যান্সিং করেও বেশ ভালো মানের ক্যারিয়ার বানাতে পারেন। সেক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশি বিদেশি কোম্পানি বা ক্লায়েন্টের জন্য আপনি তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন প্রজেক্ট করে দিতে পারেন।

এখন চলুন আসা যাক এই সেক্টরে ভালো করতে গেলে আপনার মধ্যে কি কি গুন বা ক্রাইটেরিয়া থাকা দরকার। 

প্রথমত আপনার মধ্যে ক্রিয়েটিভিটি থাকতে হবে। বিভিন্ন আইডিয়া বা উপায় নিয়ে ভাবতে হবে কীভাবে আপনি একটি এনিমেশন ও গ্রাফিক্স দিয়ে আপনার দর্শকের মনোযোগ আকর্ষণ করবেন। এ্যাটেনশন গ্র্যাব করাটাই এই বর্তমান ডিজিটাল দুনিয়ায় সবচেয়ে দামী কাজ। এক্ষেত্রে আপনার দেখার চোখ বাড়াতে হবে। যত বেশি ভালো ভালো কাজ দেখবেন আপনার মাথায় তত আইডিয়া খেলবে।

দ্বিতীয়ত টেকনিক্যাল স্কিল, ভালো মোশন গ্রাফিক্স ডিজাইনার হতে আপনাকে অবশ্যই এডবি আফটার ইফেক্ট (adobe After Effect), ফটোশপ (Photoshop), ইলাস্ট্রেটর (Illustrator) এই টুলস গুলো জানতে হবে। লার্নিং বাংলাদেশ থেকে আপনি A to Z of Adobe After Effects এবং ৩ মাস ব্যাপি মোশন গ্রাফিক্স এর উপর বুটক্যাম্প প্রোগ্রামে জয়েন করে এই টেকনিক্যাল স্কিলগুলো ডেভেলপ করতে পারেন। ইতোমধ্যে আমাদের কোর্সগুলো করে অনেক লার্নার দেশে বিদেশে মোশন গ্রাফিক্স এ ভালো ক্যারিয়ার ডেভেলপ করেছেন।

তৃতীয়ত কমিউনিকেশান স্কিল, এটা অলমোস্ট যেকোনো ক্যারিয়ারে ভালো করতেই দরকার। কারন আপনার বিভিন্ন প্রজেক্ট নিয়ে আপনাকে ক্ল্যায়েন্ট এবং টিমের সঙ্গে কমিউনিকেট করতে হবে। একটা জিনিষ তৈরি হবার আগেই সেটার সম্পর্কে মানুষকে ভিজুয়ালাইজ করাতে হবে অথবা অন্য কেউ কি চাচ্ছে সেটা আপনাকে বুঝে ভিজুয়ালাইজ করতে হবে। তাই ভালো কমিউনিকেশান মাস্ট।

চতুর্থত এ্যাটেনশন টু ডিটেইল (attention to detail); আমি বলবো এই স্কিলটাও সব ক্রিয়েটিভ এমনকি নন ক্রিয়েটিভ পেশায় দরকার। বেস্ট কোয়ালিটি এনিমেশন কিংবা গ্রাফিক্স ডেলিভার করতে এই গুনটি আপনার থাকতে হবে। ছোট ছোট প্রত্যেকটা বিষয় মনোযোগের সঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে।

এবং ফাইনালি টাইম ম্যানেজমেন্ট স্কিল, এটাও একটা ইউনিভার্সাল স্কিল। যেকোনো পেশায় ভালো করতে গেলেই আপনার এটা লাগবে। আর মোশন গ্রাফিক্স এ তো আরও অনেক বেশি, টাইম মতো প্রজেক্ট সাবমিশান, রিভাইস এসব তো করতেই হবে। আর সাধারণত এসব প্রজেক্টে দেখা যায় সিডিউল অনেক টাইট থাকে, তাই ভালো টাইম ম্যানেজমেন্ট স্কিল থাকতে হবে। 

তো মুল কথা হচ্ছে এখনকার সময়ে মোশন গ্রাফিক্স ডিজাইনার একটি এক্সাইটিং ও লুক্রেটিভ ক্যারিয়ার। টেকনিক্যাল স্কিল এর সঙ্গে আরও কিছু বেসিক কিন্তু ইম্পরট্যান্ট বিষয়ের দিকে মনোযোগ রাখলে এক্ষেত্রে আপনি দারুণ ক্যারিয়ার গড়তে পারবেন এবং সাকসেস আর টাকা পয়সা কামাতে পারবেন। 

লার্নিং বাংলাদেশ এর কোর্সগুলো ডিজাইন করা হয়েছে খুবই সহজ ভাষায়, যেকেউ আমাদের কোর্স গুলো সফলভাবে কমপ্লিট করতে পারবেন। এখানে টেকনিক্যাল স্কিলগুলো স্টেপ বাই স্টেপ দেখানো হয়েছে, এবং টাস্ক করার মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন স্টেজ পার করবেন, এছাড়া আমাদের লার্নার কমিউনিটি, সাপোর্ট, এবং রেগুলার লাইভ ওয়ার্কশপ আপনার ফুল লার্নিং প্রসেসটাকে অনেক স্মুথ ও ইন্টারেক্টিভ করবে। তাছাড়া সফলভাবে কোর্স শেষ করলে থাকছে সার্টিফিকেট ও ইন্টার্নশিপ এর সুযোগ। এছাড়াও আমাদের ভালো লার্নারদের জব প্লেসমেন্ট কিংবা ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং এও আমরা একান্ত আন্তরিক। 

তো কি ভাবছেন? মোশন গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখতে চান?

Related Articles

মোশন গ্রাফিক্স ডিজাইনার – ক্যারিয়ার হিসেবে কেমন এবং ভালো করার জন্য কি প্রয়োজন

যেকোনো একটা ভিডিও অনেক বেশি ইন্টারেস্টিং হয় যখন ভিডিওতে নরমাল এডিটিং এর পাশাপাশি ঠিকঠাক মতো মোশন গ্রাফিক্স এর কাজ থাকে। আজকে আপনাদের সঙ্গে গল্প করবো…

ক্লায়েন্ট এপ্রোচ থেকে ডিল ক্লোজিং: স্টেপ বাই স্টেপ গাইড

ক্লায়েন্ট এপ্রোচ করার সঠিক পদ্ধতি যেকোনো ব্যবসার সফলতার মূল চাবিকাঠি। একজন ক্লায়েন্টকে দক্ষভাবে এপ্রোচ করতে পারা মানে শুধুমাত্র একটি প্রজেক্ট জেতা নয়, বরং একটি দীর্ঘমেয়াদী…

১০ উপায়ে অনলাইন থেকে ইনকাম করুন বাসায় বসেই

Covid-19 রোগের কারণে আমরা অনেকেই বর্তমানে বাসা থেকে অফিস করার এক্সপেরিয়েন্স পেয়েছি। এতে একদিকে যেমন প্রতিদিনের যানজট এড়ানো গিয়েছে তেমনি পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথেও আমাদের…

নলেজ, স্কিল এবং এক্সপেরিয়েন্স – গ্রোথ জার্নি

নলেজ বা জ্ঞ্যান, স্কিল বা দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা বা এক্সপেরিয়েন্স তিনটি বিষয় আমাদের প্রত্যেকের পার্সোনাল কিংবা প্রফেশনাল গ্রোথ এর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় এই…

মোশন গ্রাফিক্সে সফল ক্যারিয়ার গড়ার ১৫ টি টিপস

সম্ভবত ‘মোশন গ্রাফিক্স’ বাংলাদেশের জন্য অন্যতম একটি সেক্টর যেখানে ইন্টারন্যাশনাল ক্লায়েন্টের পাশাপাশি বাংলাদেশও কাজের বড় ক্ষেত্র রয়েছে। কারণ ছোট বড় যেকোনো প্রতিষ্ঠানেরই প্রোমোশন করতে হয়।…

Responses

Your email address will not be published. Required fields are marked *