SME Stories | Episode 1 | যেভাবে SME বিজনেস স্কেলআপ করবেন?
একজন উদ্যোক্তা ৪-৫ বছর বিজনেস অপারেশনের ‘কিছুটা’ অভিজ্ঞতা অর্জনের পর যখন বুঝতে পারে যে…
“কিছু কিছু বিষয় যদি বিজনেস শুরুর আগেই জানতে পারতাম তাহলে পথ চলাটা অনেক সহজ হয়ে যেত, বিজনেসের গ্রোথটাও আর্লি স্টেজে হতো”
SME বা Small Medium Enterprize এর জন্য বিজনেস স্কেলআপ করা বেশ চ্যালেঞ্জিং একটি বিষয়। উদ্যোক্তার নিজের মূলধন দিয়ে শুরু হওয়া বিজনেসে প্রথম ৩-৫ বছর টাকা-পয়সার টানপোড়ন তো থাকেই, সাথে…
- বিজনেস ফর্মেশন
- যোগ্য কর্মী খুজে জায়গা মতো বসানো,
- কর্মীদের ম্যানেজমেন্ট
- ক্লায়েন্ট হান্টিং
- ডিমান্ড ও সাপ্লাই সাইড মার্কেটিং ও ম্যানেজমেন্ট
- বিজনেস আগাতে ব্যাংক লোন ও ইনভেস্টমেন্ট
- সেইম প্রোডাক্ট ও সার্ভিসে নতুন কম্পিটিশন
- বিজনেস পার্টনারদের মধ্যে ভেজাল-ক্যাচাল সহ
কত শত প্রবলেম ও ইস্যুতে ক্ষুদ্র ও মাঝারী উদ্যোক্তাদের জীবন একদমই জর্জরিত হয়ে যায়। তাই প্রতিনিয়তই একজন উদ্যোক্তাকে আপ-টু-ডেট থাকতে হয়।
লার্নিং বাংলাদেশ থেকে আমরা SME উদ্যোক্তাদের উপর সিরিজ পোস্ট নিয়ে আসছি, যা থেকে উদ্যোক্তারা উপকৃত হতে পারবেন। তো চলুন শুরু করি আজকের প্রথম পোস্ট!
আইডিয়া আসলেই সেটাতে ঝাপিয়ে না পরে আগে ‘আইডিয়া ভ্যালিডেশন’ করুন। আইডিয়াই সবকিছু না, এক্সিউশন করতে রিসোর্স, বাজেট, টিম, ইনভেস্টমেন্ট অনেক জরুরি। এছাড়া সবকিছু এনসিউর করেও যে আইডিয়া সফল হবে তাঁর নিশ্চয়তা নেই। কারণ ‘টাইমিং’ বলে একটা আছে। টাইমিং ও এক্সিকিউশন যদি প্রোপারলি ম্যাচ না করে তাহলে আইডিয়া ভালো হলেও ভ্যালিডেশনের অভাবে বিজনেস ফ্লপ হবার সম্ভাবনা থেকে যায়। তাই, আইডিয়া থেকে ছোট খাটো MVP করে দেখা উচিত। আর MVP তে যত কম খরচ ও রিসোর্সে আইডিয়া ভ্যালিডেট করা যায় ততো ভালো।
আপনার যেখানে স্ট্রেন্থ আছে সেখানে অন্য বিজনেস পার্টনারের আসলে প্রোয়োজন নেই। বরং এমন স্ট্রেন্থে বিজনেস পার্টনার নিন, যেখানে আপনার উইকনেস আছে। যেমন ধরুন আপনি মার্কেটিং এ ভালো, তাহলে অপারেশনে ভালো কাউকে বিজনেস পার্টনার করুন। বা আপনি লিডারশিপে ভালো, তাহলে নেটওয়ার্কিং এ ভালো এমন কাউকে বিজনেস পার্টনার নিন। শুধুমাত্র টাকা ইনভেস্ট করার জন্য বিজনেস পার্টনার নেওয়া থেকে বিরত থাকুন।
কাস্টমারের আস্থা অর্জন থেকে লিগ্যাল ইস্যু, ইনভেস্টমেন্ট রেইজ করা, ব্যাংক থেকে লোন নেওয়া থেকে শুরু করে টেন্ডার সাবমিট করে কাজ পাওয়া পর্যন্ত সব জায়গাতেই ট্রেড লাইসেন্স ও বিজনেস ফর্মেশনের বয়স বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই যখন থেকে মনস্থির করে ফেলবেন, ঠিক তখনই ট্রেড লাইসেন্স ও বিজনেস ফর্মেশন করে ফেলুন।
ব্যাংক লোন পাওয়া থেকে শুরু থেকে ইনভেস্টমেন্ট রেইজ করা পর্যন্ত, আর সাথে সরকারি ভর্তুকি বা অনুদান পাওয়ার মতো বিষয় মিস করবেন, যদি কিনা প্রতিষ্ঠানের ট্রানজেকশন ব্যাংক একাউন্টে না করে থাকেন।
২ বছর বিজনেস টিকে থাকা মানে আপনার বিজনেস ভালো করছে, বা করার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই ২ বছর পার হওয়ার পর ব্যাংকের ট্রাঞ্জেকশন দেখিয়ে লো ইন্টারেস্ট রেটে ব্যাংক থেকে কোটি টাকা পর্যন্ত SME লোন পেতে পারেন।
যেন বিজনেস অপারেশনে ইনভেস্টর হ্যাম্পার্ড করতে না পারে তাই ইনভেস্টমেন্ট নেওয়ার ক্ষেত্রে টার্ম শিট ও লিগ্যাল ইস্যুতে ক্লিয়ার থাকুন।
অফিস সেটাপ, কর্মী-নিয়োগ এর আগে নিজ বাসায় বসে স্বল্প বাজেটের মধ্যে প্রথম কিছু ক্লায়েন্ট নিজেই অনবোর্ড করুন।
বিজনেসকে ব্র্যান্ড বানাতে লোগো, ডিজাইন, ওয়েবসাইট, ও কাস্টমার এক্সপেরিয়েন্সে শুরু থেকে জোর দিন।
বিজনেসে একটি কমন মিসটেক হচ্ছে ফাউন্ডার তাঁর কাজের জন্য স্যালারি নেয় না। এটা মোটেও করা উচিত নয়। কারণ আপনার জায়গায় অন্য কাউকে সেইম কাজের জন্য নিয়োগ দিলেও তাঁর পিছনে খরচ দিতে হতো। তাই আপনি স্যালারি না নিয়ে প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের দাম ফিক্স করলে সেটা ভুল হবে। আর লং টার্মে যেয়ে আপনি যদি আবার সেই দাম বাড়িয়ে ফেলেন তাহলে মার্কেটে আপনার ভ্যালু কমে যাবে। তাই শুরু থেকেই কম করে হলে আপনার নিজ পরিশ্রমের জন্য স্যালারি নির্ধারণ করুন।
অনেক টাকা ইনভেস্টমেন্ট নিয়ে জোরে সোরে নেমে মার্কেট ধরার চাইতে, কাস্টমারের চাহিদা, রুচি, কম্পিটিশন, আর আপনার স্ট্রেন্থ বুঝে ধীরে ধীরে রোলিং মানি দিয়ে বিজনেস গ্রো করুন। অর্থাৎ ১ টাকা ইনভেস্ট করে ৩ টাকা পেলে, সেখান থেক দেড় টাকা নতুন ভাবে ইনভেস্ট করে আস্তে আস্তে বিজনেস গ্রো করুন।
মার্কেটিং বাজেট ১ ডলার দিয়ে শুরু করে ধীরে ধীরে সেলসের উপর বেইজ করে মার্কেটিং বাজেট রেইজ করুন। এতে মার্কেটিং বাজেটের বিপরীতে সেলস ভলিউম ও প্রোফিট মার্জিন ধরে রেখে আস্তে আস্তে বিজনেস গ্রো করতে পারবেন।
বিটুবি ক্লায়েন্ট হলে প্রোজেক্ট শুরুর আগেই ডেডলাইন, ডেলিভারি ও প্রসেসের উপর ভিত্তি করে প্রোজেক্ট ডকুমেন্টেশন করে ফেলুন। আর টিম নিয়ে এলাইন ভাবে কাজ করতে প্রোজেক্ট ডকুমেন্টেশনের বিকল্প নেই।
ডিজিটাল মার্কেটিং চ্যানেলগুলো (ফেইসবুক, গুগল সার্চ, ইউটিউব) আপনার প্রতিষ্ঠানের কর্মীর মতোই ডেডিকেটেডলি দিন-রাত খেটে সেলস নিয়ে আসতে পারবে। তবে সেক্ষেত্রে আপনাকে সেভাবেই মার্কেটিং ও সেলস অটোমেশন করতে হবে।
বিজনেসের সব কার্যক্রম, এটেনডেন্স-লিভ, লিড জেনারেশন, কাস্টমার, এস্টিমেট, ইনভয়েস, একাউন্টস সবকিছুই CRM এ ম্যানটেইন করুন। কাজ সহজ হয়ে যাবে, রেকর্ড থাকবে, ও বিজনেস গ্রো করতে হাতে অনেক সময় পাবেন।
বিজনেসের শুরুতে সব কাজ নিজে করলেও আস্তে আস্তে কাজ ডেলিগেশনে জোর দিন। অর্থাৎ যোগ্য কর্মী নিয়োগ দিয়ে তাদের ইনভলভেমেন্ট ও সময় বিজনেসে যত নিয়ে আসবেন, বিজনেস ততো আগাবে।
Responses