১০ উপায়ে অনলাইন থেকে ইনকাম করুন বাসায় বসেই
Covid-19 রোগের কারণে আমরা অনেকেই বর্তমানে বাসা থেকে অফিস করার এক্সপেরিয়েন্স পেয়েছি। এতে একদিকে যেমন প্রতিদিনের যানজট এড়ানো গিয়েছে তেমনি পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথেও আমাদের একটি ভালো বন্ডিং তৌরি হয়েছে। পরিবারকে সময় দিয়ে যেভাবে ফ্যামিলি লাইফটাতে প্রাণ নিয়ে আসতে পারছি তেমনি বাসায় বসেই যদি অফিসের কাজের পরের অবসরে অনলাইন থেকে উপার্জন করা যায় সেক্ষেত্রে দীর্ঘ মেয়াদে অর্থনৈতিক মন্দার সময়টাতে ফ্যামিলিকে নিয়ে ভালো থাকতে পারবো।
কিন্তু আমার কি অনলাইন থেকে ইনকাম করার সুযোগ আছে?
আপনি যেরকম অফিসের জন্য বাসায় বসে কাজ করছেন, বা আপনার বাসায় বসে যেই কাজ করা থেকে আপনার অফিস উপকৃত হচ্ছে সেই ধরণের কাজের ডিমান্ড কিন্তু সারা বিশ্ব জুড়েই আছে। যেহেতু আপনি বাসায় বসে কাজ করতে পারছেন তার মানে হচ্ছে আপনার হয় হার্ড স্কিল বা সফট স্কিল আছে।
হার্ড স্কিল বলতে এমন দক্ষতাকে বোঝায় যা সুনির্দিষ্ট কাজে প্রয়োগ করা যায় ও সঠিকভাবে যার মূল্যায়ন করা সম্ভব। সাধারণত টেকনিক্যাল দক্ষতাগুলো এর অন্তর্ভুক্ত। যেমন: ডিজিটাল মার্কেটিং এর উপর দক্ষতা, মোশন গ্রাফিক্স করতে পারা বা প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ লিখতে পারা।
সফট স্কিল বলতে এমন দক্ষতাকে বোঝায় যা আপনার ব্যক্তিত্বের সাথে সম্পর্কিত ও কোন নির্দিষ্ট উপায়ে যার পরিমাপ বা যথাযথ মূল্যায়ন করা সম্ভব নয়। যেমন: প্রচণ্ড মানসিক চাপ সামলানোর ক্ষমতা, টিম ম্যানজমেন্ট করা, প্রজেক্ট তদারকি করা।
মজার বিষয় হচ্ছে আমাদের সবার ভিতরেই কোন না কোন ধরণের স্কিল রয়েছে যা আমরা কাজে লাগিয়ে ইনকাম শুরু করে দিতে পারি অনলাইন থেকে। যেমন ধরুন, আপনি খুব ভালো ফেইসবুকে লিখতে পারেন, আপনার লেখায় প্রচুর মানুষ লাইক কমেন্ট করে। আপনি কি এই লেখা-লেখির কাজ করে ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসগুলো থেকে উপার্জন শুরু করতে পারেন। ধরলাম আপনার লেখার হাত নেই, কিন্তু আপনি প্রচুর মুভি দেখেন বা এনটারটেইনমেন্ট বিজনেসের খবরাখবর রাখেন। আমি বলবো আপনি ইউটিউবেই ভিডিও বানানো শুরু করে দিন। এই করোনায় শাহরুখ খান কত টাকা ডোনেট করলো এই ভিডিও দেখার বহু মানুষ আছে, আর আপনি এই ভিডিওই সুন্দরভাবে কপিরাইট ছাড়া বানিয়ে ইউটিউব থেকে উপার্জন করতে পারেন।
৮ বছরের ক্যারিয়ারে আমি চাকরি ও বিজনেস থেকে যেভাবে আয় করার সুযোগ পেয়েছি, পাশাপাশি ফাইভারে ফ্রিল্যান্সিং, ইউটিউব ভিডিওতে এডসেন্স, এমাজনের এফিলিয়েশন প্রোগ্রাম, ইনভাটো মার্কেটপ্লেসে ডিজিটাল প্রোডাক্ট, ও অনলাইন কোর্স সেল করে আমার ইনকাম জেনারেট হয়েছে।
আর তাই আসন্ন অর্থনৈতিক মন্দা থেকে যেন আপনি নিজেকে ও আর আপনার পরিবারকে সেইফ রাখতে পারেন সেই চিন্তা থেকে আমি আমার অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে চাচ্ছি এই ব্লগ এর মাধ্যমে।
কি কি মাধ্যম থেকে অনলাইনে ইনকাম করা যায়?
অফলাইনে আমরা যেরকম অনেকে অনেক পেশার সাথে জড়িত, তেমনি অনলাইন মার্কেটপ্লেসটাও সুবিশাল। সত্যিকার অর্থে কাজের ক্ষেত্র বিবেচনা করলে আমরা অনলাইন-অফলাইন দুটো মাধ্যমেই এখন এক হয়ে গিয়েছে। যেমন একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার অফলাইনে যেভাবে কোনো প্রতিষ্ঠানের জন্য কাজ করে, সে অনলাইনে সেইম ধরণের কাজ ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসেও করতে পারে। এমনকি আগে একজন এসি রিপেয়ার মিস্ত্রি বা ট্রাক ভাড়া করার জন্য আমাদের অফলাইন মাধ্যমগুলোতে খোঁজ খবর নিতে হতো। এখন কিন্তু অনলাইনেই অ্যাপের মাধ্যমেই আমরা এই ধরণের সার্ভিস অর্ডার করতে পারছি। এর মানে হচ্ছে আমরা যদি কোনো একটা কাজ পারি সেই কাজের ক্ষেত্র অফলাইন, অনলাইন দুটো মাধ্যমেই রয়েছে। তো চলুন দেখে নেওয়া যাক প্রচলিত কাজের ক্ষেত্রগুলো ছাড়া আর কি কি অনলাইন মাধ্যম থেকে ইনকাম করা সম্ভব। দ্বারা অনলাইন কোর্স অফার করতে যাচ্ছি। আশা করি কোর্সগুলো থেকে আপনারা দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন।
১ ফ্রিল্যান্সিং থেকে উপার্জন:
ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে আপনি দুইভাবে কাজ করতে পারেন। Upwork, Freelancer প্ল্যাটফর্মে আপনাকে ক্লায়েন্টের প্রজেক্ট দেখে বিড করে কাজ পেতে হবে, আর Fiverr ও People Per Hour মতো সাইটে আপনি প্রজেক্ট দেখে বিড করার পাশাপাশি আপনার সার্ভিস গুলো প্রাইস সেট করে তুলে রাখতে পারেন। কোন ক্লায়েন্টের আপনার সার্ভিস পছন্দ হলে আপনাকে ম্যাসেজ পাঠাবে বা সরাসরি অর্ডার করে বসবে। অর্ডার ভালোভাবে সময়ের মধ্যে ডেলিভারি করতে পারলে ক্লায়েন্ট আপনার সার্ভিসের রিভিউ দিয়ে কমপ্লিট হিসাবে অর্ডারটি ক্লোজ করবে। কাজ ক্লোজ করার ১৫ দিনের মধ্যেই আপনি আপনার কাজ কমপ্লিটের টাকাটি পেওনিওয় বা অন্য পেমেন্ট মেথডের মাধ্যমে বাংলাদেশের একাউন্টে ট্রান্সফার করতে পারবেন।
যা কিছু নিয়ে শুরু করা সম্ভব ফ্রিল্যন্সিং:
- যেকোন হার্ড বা সফট স্কিল যেমন গ্রাফিক্স ডিজাইন, এনিমেশন, ওয়েবসাইট ডেভলপমেন্ট, ভার্চুয়াল এসিস্টেন্সি, টিম ম্যানেজমেন্ট
- মার্কেটপ্লেসগুলোতে প্রফেশনাল কমপ্লিট করা প্রোফাইল
- মার্কেটপ্লেসগুলোর গাইডলাইন মেনে কাজে বিড করা, বা সার্ভিস এনলিস্ট করা
- পেমেন্ট রিসিভ করার জন্য পেওনিয়ার বা অন্য একাউন্ট
২ ইউটিউব থেকে ইনকাম
ইউটিউবে বর্তমানে ২ বিলিয়ন অর্থাৎ ২০০ কোটি মান্থলি একটিভ ইউজার আছে। এই ২০০ কোটি একটিভ ইউজার প্রতিদিন এভারেজে ১১ মিনিট ২৪ সেকেন্ড করে ইউটিউব ভিডিও দেখে। আর এই ভিডিওগুলো ইউজাররা দেখে ইউটিউবের রিকমান্ডেশন এলগোরিদম এর সাজেশন অনুযায়ী। অর্থাৎ আমি একটা ভিডিও দেখা শুরু করলাম ইউটিউবে এরপর ঐ ভিডিওর নিচের সাজেস্টেড ভিডিও থেকে আমি অন্য ভিডিও দেখা শুরু করলাম। এর মানে হচ্ছে আপনি যদি ইউটিউবের জন্য যেকোন টপিক নিয়ে কোয়ালিটি ভিডিও বানাতে পারেন এবং তাহলে ইউটিউবের এলগরিদমই ঐ ভিডিওর টার্গেট অডিয়েন্স এর কাছে আপনার ভিডিও পৌঁছে দিবে। কোয়ালিটি ভিডিও বানানো ছাড়া আপনার আর কোনো প্রকার এক্সট্রা হ্যাসালই নিতে হচ্ছে না।
যা কিছু নিয়ে শুরু করা সম্ভব ইউটিউব ভিডিও থেকে উপার্জন:
- টার্গেট অডিয়েন্স ধরে ইউনিক টপিক খুঁজে বের করা
- ভিডিও রেকর্ড, ফুটেজ এডিট করে, বা মোশন গ্রাফিক্স দিয়ে বানানোর অভিজ্ঞতা
- ইউটিউব কমিউনিটি গাইডলাইন বুঝে, মেনে ভিডিও কনটেন্ট পাবলিশ করা
- গুগল এডসেন্স পার্টনারশীপ প্রোগ্রাম সম্পর্কে বেসিক আইডিয়া
- এডসেন্স পার্টনারশীপ এপ্রুভাল (১০০০ সাবস্ক্রাইবার ও ৪০০০ ঘন্টা ওয়াচটাইম হবার পর)
গুগলের একটা পার্টনার প্রোগ্রাম হচ্ছে এডসেন্স। এডসেন্স কাজ করে অনেকটা বিজ্ঞাপনী সংস্থার মতো, অর্থাৎ যারা নিজেদের ইউটিউব, ওয়েবসাইট, অ্যাপ বা গেইমে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে উপার্জন করতে চান তাঁরা গুগল এডসেন্সে একাউন্ট খুলে তাঁদের গাইডলাইন মেনে নিজেদের কনটেন্টে এড দেখাতে পারেন। এড দেখানোর উপর আপনি টাকাটা পাবেন দুইটা বিষয়ের উপর, এক, কতজন মানুষ বিজ্ঞাপনটি দেখলো, দুই, কতজন মানুষ বিজ্ঞাপনটিতে ক্লিক করলো।
৩ ব্লগ সাইট থেকে অনলাইন ইনকাম
আপনি ভিডিও বানাতে পারছেন না তবে বেশ লেখালেখি করতে পারেন, তাহলে আপনি ব্লগ সাইট বানিয়েও সেখান থেকে উপার্জন করতে পারেন। তবে যেকোন টপিক নিয়ে লিখলেই যে ‘চ্যালচ্যালাইয়া’ টাকা আসতে থাকবে বিষয়টা তা নয়। আপনাকে আপনার টার্গেট অডিয়েন্স ধরে তাঁদের মনের মতো টপিক নিয়ে লেখা লেখি করতে হবে যেন বেশী সংখ্যক মানুষ আপনার ব্লগ/আর্টিকেল পড়ে। ধীরে ধীরে ইউজার যত বাড়তে থাকবে ততো বেশীই গুগল আপনাকে গুরুত্ব দিবে। আর গুগল আপনাকে গুরুত্ব দেওয়ার অর্থ হচ্ছে যখন কেউ গুগল সার্চ ইঞ্জিন থেকে আপনার লিখা টপিক রিলেটেড কিওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করবে আপনার ব্লগ সাইটের লিংক গুগল সার্চ রেজাল্টের প্রথম পেইজে চলে আসবে।
আর ইনকাম জেনারেট করতে পারবেন তখন থেকে যখন আপনার ব্লগ সাইট গুগল এডসেন্স প্রগ্রামের জন্য এপ্রুভাল পাবে। একবার এপ্রুভাল পাওয়ার পর গুগল এডসেন্সের কোড ব্লগ সাইটে বসানোর প্লেসমেন্ট অনুযায়ী আপনার অডিয়েন্সরা আপনার ব্লগ পেইজে লেখার মাঝে মাঝে, বা সাইটের পাশের সাইডবার এ বিজ্ঞাপন দেখতে পারবে। আর ইউটিউবের মতোই ইমপ্রেশন ও ক্লিকের উপর নির্ভর করে আপনার এডসেন্সে $ জমতে শুরু করবে।
যা কিছু নিয়ে শুরু করা সম্ভব ব্লগ সাইট:
- ওয়ার্ডপ্রেসে দিয়ে বেসিক ওয়েবসাইট সাইট তৈরির অভিজ্ঞতা
- কীওয়ার্ড রিসার্চ করে SEO ফ্রেন্ডলি কনটেন্ট লেখার অভিজ্ঞতা
- ব্লগের সাথে রিলেটেড ইমেইজ ও ভিডিও পাবলিশ করার মতো বেসিক গ্রাফিক্স ডিজাইন ও ভিডিও এডিটিং অভিজ্ঞতা
- পাবলিশ করার কনটেন্ট এর ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে টার্গট অডিয়েন্সের কাছে দ্রুত ছড়িয়ে দেওয়া
৪ ওয়েবসাইট সাবস্ক্রিপশন থেকে ইনকামের উপায়
ধরুন আপনি বেশ ভালো রাঁধুনি। আপনার রান্না নিয়ে একটা ইউটিউব চ্যানেলও আপনি মেনটেইন করছেন। এই ভিডিওগুলো থেকে ফেইসবুক, বা ইউটিউবে অলরেডি ফ্যান ফলোয়ার তৈরি হচ্ছে। এখন তাহলে আপনি আপনার কিছু প্রিমিয়াম রান্নার রেসিপি কনটেন্ট থেকে উপার্জন শুরু করতে পারেন ‘মেম্বারশীপ সাবস্ক্রিপশন’ করে। অর্থাৎ আপনার সাইটের প্রিমিয়াম রান্নার রেসিপি কনটেন্ট দেখার জন্য আপনার অডিয়েন্সদের পেমেন্ট করতে হবে। যদি ৫০ টাকা দিয়ে কোন একটা রেসিপি ১০০০ মানুষও ১ মাসে দেখে তাহলে ৫০ হাজার টাকা আপনার উপার্জন মাত্র একটা প্রিমিয়াম রেসিপি কনটেন্ট থেকে!
এবার চিন্তা করে দেখুন আপনার রেসিপি সাইটে ১ বছরে ৫০টির বেশি প্রিমিয়াম রেসিপি কনটেন্ট পাবলিশ করলেন, তাহলে কত টাকা আয় হতে পারে মাসে?
এই সাবস্ক্রিপশন মাধ্যমে, আপনি নিদির্ষ্ট কোন ব্লগ বা ওয়েবসাইট পেইজ দেখানোর জন্য যেমন চার্জ করতে পারেন তেমনি মেম্বাররা চাইলে যেন ডেইলি, সাপ্তহিক, বা মাসিক মডেলে আপনার সাবস্ক্রিপশন নিতে পারে সেই ব্যবস্থাও করতে পারেন।
যা কিছু নিয়ে শুরু করা সম্ভব মেম্বারশীপ সাবস্ক্রিপশন সাইট:
- ওয়ার্ডপ্রেসে দিয়ে বেসিক ওয়েবসাইট সাইট তৈরির অভিজ্ঞতা
- প্রিমিয়াম ও ইউনিক কনটেন্ট পাবলিশ করার অভিজ্ঞতা
- সাবস্ক্রিপশন বেসিস মেম্বারশিপ প্ল্যাগইন ইন্সটল করার অভিজ্ঞতা
- পেমেন্ট গেটওয়ে যেমন Stripe, PayPal বা দেশীও পেমেন্ট গেটওয়ে SSL Commerz সেটাপের অভিজ্ঞতা
৫ ডিজিটাল প্রোডাক্ট বানিয়ে অনলাইন ইনকাম
ধরুন আপনি ভালো ছবি তুলতে পারেন, আপনার পিসি ঘাটলে হাজার হাজার ভালো ছবি পাওয়া যাবে। আপনার এই ছবি তোলার শখই আপনি ইনকামের মাধ্যম হিসাবে কাজে লাগাতে পারেন। কিভাবে?
ইমেইজ বাজার, শাটারস্টক, এনভাটো গ্রাফিক রিভার, ফ্রীপিক, সহ বেশ ভালো ভালো কিছু প্ল্যাটফর্ম আছে যেখানে আপনি কন্ট্রিবিউটার হয়ে এই ধরনের ছবি তুলে রেখে দিতে পারেন। আপনার ছবি যখনই এই প্ল্যাটফর্ম গুলো থেকে কেউ কিনে নিবে তখনই আপনি প্রতি সেলের জন্য কমিশন পাবেন। তবে এই ধরনের প্ল্যাটফর্মগুলো সব ধরণের ছবি এক্সেপ্ট করে না। আপনার ছবির কোয়ালিটি, রেজুলেশন ভালো হতে হবে। তবেই এপ্রুভাল এর সম্ভাবনা অনেক বেশী বেড়ে যাবে।
ছবি ছাড়া কি আর ডিজিটাল প্রোডাক্ট সেল করা সম্ভব না?
সম্ভব। ছবি ছাড়াও আপনি যদি গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ পারেন, যেমন ব্যানার ডিজাইন, ফেইসবুকের পোষ্ট ডিজাইন, মোশন গ্রাফিক্স এনিমেটেড ভিডিও, কিনবা থ্রিডি মডেলিং… আপনি এই ধরণের সব প্রোডাক্টই এই ধরণের মার্কেটপ্লেসগুলোতে সেল করতে পারবেন।
যা কিছু নিয়ে শুরু করা সম্ভব ডিজিটাল প্রোডাক্ট:
- ফ্রিল্যন্সিং এর মতো আপনাকে কোন একটা পার্টিকুলার হার্ড স্কিল গড়ে তুলতে হবে ডিজিটাল প্রোডাক্ট সেল করার জন্য
- ইউনিক, প্রফেশনাল কাজ আপ করতে হবে
সোজা বাংলায় বোঝালে হচ্ছে সেলস এজেন্ট হিসাবে কাজ করে উপার্জন করাটাই হচ্ছে এফিলিয়েট মার্কেটিং। শেয়ার মার্কেটে যেমন ব্রোকারেজ হাউজ গুলো এজেন্ট হিসাবে কাজ করে, তেমনি এমন অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যাদের পণ্য যদি আপনার মাধ্যমে কেউ অর্ডার করে তাহলে আপনি ঐ অর্ডারের ৪-৮% পর্যন্ত কমিশন পেতে পারেন। ধরুন আপনি এমাজন বা আলিবাবা এর এফিলেয়েট প্রোগ্রামের সাথে যুক্ত।
এখন আপনি একটা ওয়েবসাইট ডেভলপ করলেন যেখানে শুধুমাত্র বাচ্চাদের খেলনা নিয়ে রিভিউ আছে, এবং পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে বেশ ভালো ভিজিটর আছে যারা কিনা আপনার ওয়েবসাইটে খেলনার রিভিউ দেখে, লিংক ক্লিক করে এমাজন ও আলিবাবা থেকে অর্ডার করে। এমাজন আর আলিবাবা আপনার ওয়েবসাইট থেকে কনভার্ট হওয়া প্রতিটা সেলস এর জন্য আপনাকে কমিশন পাঠিয়ে দিবে আপনার ব্যাংক একাউন্টে। আপনি হয়তো ভাবতে পারেন, আপনার মাধ্যমে কেউ কিনলে সেটার ট্র্যাক কিভাবে থাকবে! বা কেউ যদি আপনার শেয়ার করা প্রোডাক্টের লিংক ধরে ভিজিট করলো ঠিকই কিন্তু কিনলো পরবর্তী সময়ে তাহলে ঐ অর্ডার ট্র্যাক কিভাবে করবে!
ব্যাপারটা অনেক কমপ্লিকেটেড মনে হলেও আসলে বড় বড় এফিলিয়েশন প্রোগ্রামের ট্র্যাকিং সিস্টেম অনেক বেশী অর্গানাইজড। যেমন পৃথীবির সবচাইতে বড় এমাজন এফিলিয়েট প্রোগ্রামে আপনার শেয়ার করা প্রোডাক্টের লিংক ধরে কেউ প্রোডাক্ট কেনার পাশাপাশি কেউ যদি এমাজন সাইট ভিজিট করে অন্য প্রোডাক্টও কিনে তাহলেও সেটার জন্য আপনি কমিশন পাবেন।
মজার বিষয় হচ্ছে শুধুমাত্র যে ফিজ্যিকাল প্রোডাক্টেরই এফিলিয়েট মার্কেটিং প্রোগ্রাম আছে, ব্যাপারটা তা নয়। পৃথিবীর আরেকটা বড় এফিলিয়েট প্রোগ্রাম হচ্ছে Envato Marketplace, যেখানে আপনি ডিজিটাল প্রোডাক্টের এফিলেয়েট মার্কেটিং থেকে আয় করতে পারেন।
যা কিছু নিয়ে শুরু করা সম্ভব এফিলিয়েট মার্কেটিং:
- ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট তৈরি করার অভিজ্ঞতা,
- কীওয়ার্ড রিসার্চ করে SEO ফ্রেন্ডলি কনটেন্ট লেখার অভিজ্ঞতা
- ব্লগের সাথে রিলেটেড ইমেইজ ও ভিডিও পাবলিশ করার মতো বেসিক গ্রাফিক্স ডিজাইন ও ভিডিও এডিটিং অভিজ্ঞতা
- পাবলিশ করার কনটেন্ট এর ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে টার্গট অডিয়েন্সের কাছে দ্রুত ছড়িয়ে দেওয়া
৭ মোবাইল অ্যাপ থেকে ইনকাম
আপনার যদি অ্যাপ ডেভলপ করার স্কিল থাকে তাহলে আপনি এন্ড্রয়েড বা আইফোনের জন্য অ্যাপ বানিয়েও ইনকাম করতে পারেন। প্রোডাক্টটিভিটি অ্যাপ থেকে শুরু করে ক্যালকুলেটর বা লাইফ স্টাইল অ্যাপ বানিয়েও বেশ ভালো ইনকাম জেনারেট করা সম্ভব।
যা কিছু নিয়ে শুরু করা সম্ভব অ্যাপ ডেভলপমেন্ট:
- এন্ড্রয়েড বা iOS অ্যাপ ডেভলপ করার অভিজ্ঞতা
- গুগল প্লে-স্টোর বা অ্যাপল স্টোরের ডেভলপার একাউন্ট
- পেমেন্ট সেটাপের জন্য গুগল AdMob বা iAd ফ্রেমওয়ার্ক নিয়ে অভিজ্ঞতা
৮ এন্ড্রয়েড গেইম থেকে উপার্জন
গেইম খেলতে যতটা মজা, বানাতে তার চাইতে বেশী এক্সাইটমেন্ট কাজ করে। আর এই গেইম বানানোর শখটাই যদি আপনার উপার্জনের মাধ্যম হয়ে যায় তাহলে তো কেল্লা ফতে! কিন্তু গেইম ডেভলপ করা কি কঠিন কাজ? হ্যাঁ কঠিন কাজ যদি আপনি বড় সড় গেইম যেমন Assasin Creed, বা GTA Vice City এর মতো গেইম ডেভলপ করার চিন্তা করেন, কিনবা মোবাইলের জন্য Clash of clans ও AAA গেইম ক্যাটাগরিতে পরে যা অনেক গেইম ডেভলপার একসাথে কাজ করে বানায়।
কিন্তু যদি আপনি মোবাইল এর জন্য ছোট ছোট One Tap গেইমের কথা চিন্তা করেন, তাহলে কিন্তু আপনি ৩ মাসের মধ্যে গেইম ডেভলপমেন্ট শিখে এই ধরণের গেইম বানানোর কাজ শুরু করে দিতে পারেন। আমরা অনেকেই হয়তো 29 Card গেইম এন্ড্রয়েডে খেলেছি। এই গেইমটি এখন পর্যন্ত ৫০ লক্ষের বেশী ডাউনলোড হয়েছে। জানলে অবাক হবেন যে এই গেইমটি আমার এক পরিচিত ভাই একা বানিয়েছিলেন বুয়েট পড়াকালীন সময়ে। উনার এই গেইম থেকে প্রতিদিন বেশ ভালো পরিমান ইনকাম আসে গুগল এডসেন্স এর মাধ্যমে।
তাই এই লকডাউন পিরিয়ডে গেইম বানানো শিখে ফেলুন বাসায় বসে!
যা কিছু নিয়ে শুরু করা সম্ভব গেইম ডেভলপমেন্ট:
- – ইউটিনি ইঞ্জিন বা আনরিয়েল ইঞ্জিনে গেইম বানানোর অভিজ্ঞতা
- – খুব ভালো আর ইউনিক কনসেপ্ট থাকতে হবে
- – বেসিক ডিজিটাল মার্কেটিং ও এনালিটিক্স জানা থাকলে ভালো ট্র্যাকশন সম্ভব
৯ ডিজিটাল কোর্স সাবস্ক্রিপশন
আপনি যদি কোন একটা পার্টিকুলার এড়িয়ায় দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে আপনি সেই দক্ষতা থেকে যেমন ফ্রিল্যান্সিং করতে পারেন, তেমনি অনলাইন কোর্স বানিয়েও তা সেল করে আয় করতে পারেন। আপনি চাইলে ওয়ার্ডপ্রেস সাইট বানিয়ে সেখানে নিজের কোর্সগুলো সেল করতে পারেন, বা কোন থার্ড পার্টি মাধ্যমে ইন্সট্রাকটর হিসাবে সাইন আপও করে কোর্স সেল করতে পারেন।
যা কিছু নিয়ে শুরু করা সম্ভব কোর্স ডেভলপমেন্ট:
- কোন একটা হার্ডস্কিলে এটলিস্ট ৩-৫ বছরের কাজের দক্ষতা
- সুন্দরভাবে শর্ট ও প্রিসাইসলি কোর্স ক্যারিকুলাম এর উপর ভিডিও বানানোর অভিজ্ঞতা
- কোর্স নিজের সাইট বা থার্ড পার্ট সাইটে পাবলিশ করার অভিজ্ঞতা
১০ অনলাইন ওয়ার্কশপ ও ওয়েবিনার
ডিজিটাল মাধ্যমে কোর্স সেল করার পাশাপাশি আপনি চাইলে অনলাইনে ওয়ার্কশপ বা ওয়েবিনার করেও উপার্জন শুরু করতে পারেন। যদি আপনার ওয়েবসাইটে আপলোড করতে সমস্যা মনে হয়, আপনি কিন্তু ফেইসবুক পেইজ ও গ্রুপ মেনটেইন করেও মেম্বারশিপ বেসিস ওয়ার্কশপের গ্রুপ এক্সেস সেল করতে পারেন।
যা কিছু নিয়ে শুরু করা সম্ভব ওয়ার্কশপ ও ওয়েবিনার ডেভলপমেন্ট:
- কোন একটা হার্ডস্কিলে এটলিস্ট ৩-৫ বছরের কাজের দক্ষতা
- ওয়ার্কশপ অনলাইনে লাইভ করার অভিজ্ঞতা
তো এই ছিল ১০টি উপায় যা থেকে আপনি অনলাইনে বাসায় বসেই ইনকাম শুরু করতে পারেন। আপনার যদি অলরেডি স্কিল থাকে তাহলে এখনই অবসর সময়গুলো কাজে লাগিয়ে ফেলুন। আর যদি স্কিল ডেভলপমেন্ট এর প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রে ইউটিউব, অনলাইন প্ল্যাটফর্ম বা অলরেডি কোন একটা সেক্টরে কাজ করছেন এরকম ইন্সট্রাকটর এর কাছে মেন্টরশীপ নিন।
সামনের দিনগুলোতে আমরা আমাদের লার্নিং বাংলাদেশ প্ল্যাটফর্ম থেকে দক্ষ ইন্সট্রাকটর দ্বারা অনলাইন কোর্স অফার করতে যাচ্ছি। আশা করি কোর্সগুলো থেকে আপনারা দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন।
Really information good